মোঃবাহাদুর হোসেন বাদল

Sunday, April 17, 2016

কোরআন পাঠের ফযীলতঃ

No comments :

কোরআন পাঠের ফযীলতঃ

[ফেসবুকে জয়েন করতে চাইলে এখানে ক্লিক করুন।]
কোরআন আল্লাহর বানী। সৃষ্টিকুলের উপর যেমন স্রষ্টার সম্মান ও মর্যাদা অপরিসীম,  তেমনি সকল বানীর উপর কোরআনের মর্যাদা ও শ্রেষ্ঠত্ব অতুলনীয়। মানুষের মুখ থেকে যা উচ্চারিত হয়, তন্মধ্যে 

কোরআন পাঠ সর্বাধিক উত্তম।
কোরআন শিক্ষা করা, অন্যকে শিক্ষা দান করা ও কোরআন অধ্যয়ন করার মধ্যে রয়েছে অফুরন্ত ফযীলত। নিম্নে কতিপয় উল্লেখ করা হলঃ

★কোরআন শিখানোর প্রতিদান ঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, তোমাদের মাঝে সেই ব্যক্তি উত্তম যে নিজে কোরআন শিক্ষা করে ও অন্যকে কোরআন শিক্ষা দেয়। (বুখারী)
রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, যে ব্যক্তি পবিত্র কোরআনের একটি অহ্মর পড়বে, সে একটি নেকী পাবে। আর একটি নেকী দশটি নেকীর সমপরিমান। (তিরমিয়ী)
ইবনে রজব (রহঃ) বলেন, প্রতিটি নেক কাজেরই ছওয়াব দশগুন বৃদ্ধি হয়। এর প্রমান হচ্ছে আল্লাহর বানীঃ
مَن جاءَ بِالحَسَنَةِ فَلَهُ عَشرُ أَمثالِها
"যে একটি নেক কাজ করবে, তার জন্য রয়েছে অনুরুপ দশগুণ প্রতিদান"। (সূরা আল-আনআম-১৬০) আর আল্লাহ্‌ যাকে চান তাকে দশগুনেরও বেশী প্রতিদান দিবেন।

★কোরআন শিক্ষা করা, মুখস্হ করা ও তাতে দক্ষতা লাভ করার ফযীলতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, "যে ব্যক্তি কোরআন পাঠ করবে এবং তা মুখস্হ করবে (এবং বিধি বিধানের) প্রতি যত্নবান হবে, সে উচ্চ সম্মানিত ফেরেস্তাদের সাথে অবস্হান করবে। আর যে ব্যক্তি কষ্ট হওয়া সত্বেও কোরআন পাঠ করবে এবং তার সাথে নিজেকে সম্পৃক্ত রাখবে সে দ্বিগুণ ছওয়াবের অধিকারী হবে"। (বুখারী ও মুসলিম)
রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, "কিয়ামত দিবসে কোরআন অধ্যয়নকারীকে বলা হবে, কোরআন পড় এবং উপরে উঠ। যেভাবে দুনিয়াতে তারতীলের সাথে কোরআন পড়তে সেভাবে পড়। যেখানে তোমার আয়াত পাঠ করা শেষ হবে, জান্নাতের সেই সুউচ্চ স্হানে হবে তোমার বাসস্থান "।(তিরমিযী)
যার সন্তান কোরআন শিক্ষা করবে তার প্রতিদান ঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, "যে ব্যক্তি কোরআন পাঠ করবে, শিক্ষা করবে ও তদানুযায়ী আমল করবে, তার পিতা-মাতাকে কিয়ামত দিবসে একটি নূরের তাজ পরানো হবে, যার আলো হবে সূর্যের আলোর মত উজ্জল। তাদেরকে এমন দু'টি পোষাক পরিধান করানো হবে, যা দুনিয়ার সকল বস্তুর চেয়ে অধিক মুল্যবান। তারা বলবেঃ কোন আমলের কারনে আমাদেরকে এত মুল্যবান পোষাক পরানো হয়েছে? বলা হবে তোমাদের সন্তানের কোরআন গ্রহন করার কারনে"।(হাকেম)

★পরকালে কোরআন সুপারিশ করবেঃ

রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, "তোমরা কোরআন পাঠ কর। কেননা কিয়ামত দিবসে কোরআন তার পাঠকের জন্যে সুপারিশকারী হবে"। (মুসলিম)
নবী(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আরো বলেন, "কিয়ামত দিবসে সিয়াম ও কোরআন বান্দার জন্য আল্লাহর কাছে সুপারিশ করবে"। (আহমাদ, হাকেম, সহীহ তারগীব তারহীব হা/৯৮৪)

★কোরআন তেলাওয়াত, অধ্যয়ন এবং কোরআন নিয়ে গবেষনার জন্য একত্রিত হওয়ার ফযীলতঃ

রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ "কোন সম্প্রদায় যদি আল্লাহর কোন ঘরে একত্রিত হয়ে কোরআন পাঠ করে এবং তা পরস্পরে শিক্ষা লাভ করে, তবে তাদের উপর প্রশান্তি নাযিল হয়, আল্লাহর রহমত তাদেরকে আচ্ছাদিত করে এবং ফেরেস্তারা তাদেরকে ঘিরে রাখে। আর আল্লাহ্‌ তার নিকটস্থ ফেরেস্তাদের সামনে তাদের কথা আলোচনা করেন"। (মুসলিম)

★উপদেশঃ

অতএব সম্মানিত পাঠক! আপনার সময়ের নির্দিষ্ট একটা অংশ কোরআন পাঠের জন্য  নির্ধারন করুন। যত ব্যস্তই থাকুন না কেন ঐ অংশটুকু পড়ে নিতে সচেষ্ট হোন। কেননা যে কাজ সর্বদা করা হয় তা অল্প হলেও বিচ্ছিন্নভাবে বেশী কাজ করার চেয়ে উত্তম। যদি কখনো উদাসিন হয়ে পড়েন বা ভূলে যান তবে পরবর্তী দিন তা পড়ে ফেলবেন। নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, কোরআনের নির্দিষ্ট অংশ না পড়েই ঘুমিয়ে পড়ে তবে ফযর ও যোহর নামাজের মধ্যবর্তী সময়ে যেন তা পড়ে নেয়। তাহলে তার আমল নামায় উহা রাতে পড়ার মত ছওয়াব লিখে দেয়া হবে। (মুসলিম)
যারা কোরআন ছেড়ে দেয় বা কোরআন ভূলে যায় আপনি তাদের অন্তর্ভুক্ত হবেন না। 
আল্লাহ্‌ আমাদের সকলকে কোরআন পড়ার এবং বোঝার তৌফিক দান করুন। (আমিন)

No comments :