নামাজ বেহেস্তের চাবী

মোঃবাহাদুর হোসেন বাদল

Wednesday, March 30, 2016

কোরআনের আলোকে পর্দার বিধান

No comments :

কোরআনের আলোকে পর্দার বিধান

মহান আল্লাহ্‌ বলেনঃ
 يٰبَنى ءادَمَ قَد أَنزَلنا عَلَيكُم لِباسًا يُوٰرى سَوءٰتِكُم وَريشًا ۖ وَلِباسُ التَّقوىٰ ذٰلِكَ خَيرٌ ۚ ذٰلِكَ مِن ءايٰتِ اللَّهِ لَعَلَّهُم يَذَّكَّرونَ
হে বনি আদম! আমি তোমাদের লজ্জা স্হান আবৃও করার ও বেশভুষার জন্যে তোমাদের পোষাক পরিচ্ছেদের উপকরন অবতির্ন করেছি, আল্লাহর ভীতির পরিচ্ছেদই সর্ভোত্তম পরিচ্ছেদ,  এটা আল্লাহর নিদর্শন সমুহের অন্যতম নিদর্শন, সম্ভবতঃ মানুষ এটা থেকে উপদেশ গ্রহন করবে।
(সূরা আল আ'রাফ-২৬)
আল্লাহ্‌ তা'আলা বলেনঃ
 قُل لِلمُؤمِنينَ يَغُضّوا مِن أَبصٰرِهِم وَيَحفَظوا فُروجَهُم ۚ ذٰلِكَ أَزكىٰ لَهُم ۗ إِنَّ اللَّهَ خَبيرٌ بِما يَصنَعونَ
মুমিনদেরকে বল তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে সংযত করে এবং তাদের লজ্জা স্হানের হেফাযত করে, এটাই তাদের জন্য উত্তম, তারা যা করে সে বিষয়ে আল্লাহ্ অবহিত। 
(সূরা আন নূর-৩০)
মহান আল্লাহ্‌ অন্য আয়াতে বলেনঃ
 وَقُل لِلمُؤمِنٰتِ يَغضُضنَ مِن أَبصٰرِهِنَّ وَيَحفَظنَ فُروجَهُنَّ وَلا يُبدينَ زينَتَهُنَّ إِلّا ما ظَهَرَ مِنها ۖ وَليَضرِبنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلىٰ جُيوبِهِنَّ ۖ وَلا يُبدينَ زينَتَهُنَّ إِلّا لِبُعولَتِهِنَّ أَو ءابائِهِنَّ أَو ءاباءِ بُعولَتِهِنَّ أَو أَبنائِهِنَّ أَو أَبناءِ بُعولَتِهِنَّ أَو إِخوٰنِهِنَّ أَو بَنى إِخوٰنِهِنَّ أَو بَنى أَخَوٰتِهِنَّ أَو نِسائِهِنَّ أَو ما مَلَكَت أَيمٰنُهُنَّ أَوِ التّٰبِعينَ غَيرِ أُولِى الإِربَةِ مِنَ الرِّجالِ أَوِ الطِّفلِ الَّذينَ لَم يَظهَروا عَلىٰ عَورٰتِ النِّساءِ ۖ وَلا يَضرِبنَ بِأَرجُلِهِنَّ لِيُعلَمَ ما يُخفينَ مِن زينَتِهِنَّ ۚ وَتوبوا إِلَى اللَّهِ جَميعًا أَيُّهَ المُؤمِنونَ لَعَلَّكُم تُفلِحونَ
ইমান অনয়নকারী নারীদেরকে বল-তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে সংযত করে ও তাদের লজ্জা স্হানের হেফাযত করে, তারা যেন যা সাধারনতঃ প্রকাশ থাকে তা ব্যতীত তাদের আবরন প্রদর্শন না করে, তাদের গ্রিবা ও বহ্মদেশ যেন মাথার কাপড় দ্বারা আবৃত করে, তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতা, ভাতুষ্পুত্র, ভগ্নিপুত্র, আপন নারীগন, তাদের মালিকানাধীন দাসী, পুরুষদের মধ্যে যৌন কামনারহিত পুরুষ এবং নারীদের গোপন অঙ্গ সম্বন্ধে অজ্ঞ বালক ব্যতীত কারো নিকট তাদের আবরন প্রকাশ না করে, তারা যেন তাদের গোপন আবরন প্রকাশের উদ্দেশ্যে সজোরে পদহ্মেপ না করে, হে মুমিনগন! তোমরা সবাই আল্লাহর দিকে প্রত্যাবর্তন কর, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পারো।

Sunday, March 27, 2016

কোরআন পড়ি কোরআন বুঝি

No comments :

কোরআন পড়ি কোরআন বুঝি



Saturday, March 26, 2016

বাংলা নাতে রাসূল

No comments :

বাংলা ইসলামিক বই

No comments :

   বাংলা ইসলামিক বই ফ্রি ডাউনলোড


১. রিয়াদুস সালেহীন ১ম খন্ড  পৃষ্ঠা ১-৭৩
২. রিয়াদুস সালেহীন ১ম খন্ড পৃষ্ঠা ৭৪-১৫১
৩.রিয়াদুস সালেহীন ১ম খন্ড পৃষ্ঠা ১৫২-229

৪.রিয়াদুস সালেহীন ২য় খন্ড পৃষ্ঠা ১-৫১

৫.রিয়াদুস সালেহীন ২য় খন্ড পৃষ্ঠা ৫২-১১০
৬.রিয়াদুস সালেহীন ২য় খন্ড পৃষ্ঠা ১১১-১৭০

৭.রিয়াদুস সালেহীন ২য় খন্ড পৃষ্ঠা ১৭১-২৩০

৮.রিয়াদুস সালেহীন ৩য় খন্ড পৃষ্ঠা ১-৪৮

৯.রিয়াদুস সালেহীন ৩য় খন্ড পৃষ্ঠা ৪৯-১০৬

১০.রিয়াদুস সালেহীন ৩য় খন্ড পৃষ্ঠা ১০৭-১৬৪

১১.রিয়াদুস সালেহীন ৩য় খন্ড পৃষ্ঠা ১৬৫-২২২
 ১২.রিয়াদুস সালেহীন ৪র্থ খন্ড পৃষ্ঠা ১-৬৩

১৩.রিয়াদুস সালেহীন ৪র্থ খন্ড পৃষ্ঠা ৬৪-১৩৮

১৪.রিয়াদুস সালেহীন ৪র্থ খন্ড পৃষ্ঠা ১৩৯-২১৪


Saturday, March 19, 2016

Friday, March 18, 2016

my picture

No comments :





কোরআন ও হাদিসের আলোকে যিকরের ফযীলত

No comments :
আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতু
মহান করুনাময় আল্লাহর নামে শুরু করছি । 

কোরআন ও হাদিসের আলোকে যিকরের ফযীলতঃ

মহান আল্লাহ্ বলেনঃ

 فَاذكُرونى أَذكُركُم وَاشكُروا لى وَلا تَكفُرونِ
অতঃপর,তোমরা আমাকে স্মরণ করো,আমি তোমাদেরকে স্মরন করব। আর তোমরা আমার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো এবং আমার নিয়ামতের নাশোকরী করো না।
(সূরা আল বাকারাহ্-১৫২)
আল্লাহ্ তা'লা অন্যত্র এরশাদ করেনঃ

 يٰأَيُّهَا الَّذينَ ءامَنُوا اذكُرُوا اللَّهَ ذِكرًا كَثيرًا
হে ইমানদারগন! আল্লাহ্‌কে বেশী বেশী স্মরণ করো
(সূরা আল-আহযাব-৪১)
আল্লাহ অন্যত্র বলেনঃ
وَاذكُر رَبَّكَ فى نَفسِكَ تَضَرُّعًا وَخيفَةً وَدونَ الجَهرِ مِنَ القَولِ بِالغُدُوِّ وَالءاصالِ وَلا تَكُن مِنَ الغٰفِلينَ
তোমার প্রভূকে স্মরণ করো মনের মধ্যে দৃঢ়তার সাথে ও ভীতি সহকারে এবং উচ্চ আওয়াজের পরিবর্তে নিম্ন আওয়াজে আর তোমরা উদাসিন (গাফেল) দের অন্তর্ভূক্ত হয়োনা।
(সূরা আল আ'রাফ-২০৫)
মহান আল্লাহ্ বলেনঃ

Quran

No comments :


Free Download Quran
 


bangla waz mp3

No comments :

Wednesday, March 16, 2016

জাহান্নামীদের মাথায় উত্তপ্ত পানি প্রভাহিত করার মাধ্যমে আজাব

No comments :
 

কাফেরদের জন্য এ হবে আরেক ধরনের বেদনাদায়ক আজাব
(আর তা হবে এই যে) ফেরেশতাদেরকে নির্দেশ দেয়া হবে, তাকে ধরে টেনে নিয়ে যাও জাহান্নামের মধ্যখানে এবং ওখানে তার মস্তকে ফুটন্ত পানি ঢেলে তাকে শাস্তি দাও (সূরা দুখান-৪৭-৪৮)
এ আযাবের ব্যাখ্যায় নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন:যখন কাফেরের মস্তিষ্কে গরম পানি ঢেলে তাকে শাস্তি দেওয়া হবে তখন ঐ পানি তার মাথা থেকে গড়িয়ে  শরীরের সমস্ত অঙ্গ পতঙ্গকে জ্বালিয়ে পায়খানার রাস্তা দিয়ে তা তার পায়ে এসে পড়বে (মোসনাদ আহমদ)
মাথায় ফুটন্ত পানি ঢালার পর সর্বপ্রথম এ পানি কাফেরদের মস্তককে জ্বালাবে।যা তার খারাপ কামনা, বাতেল দর্ষন,শিরকি আক্বিদার কেন্দ্রবিন্দু ছিল। যে মস্তিষ্ক দিয়ে সে ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে  চক্রান্ত করত। যে মস্তিষ্ক দিয়ে সে মুসলমানদের উপর অত্যাচারের পাহাড় চাপানোর জন্য নানান রকম প্রতারনা করত। যে মস্তিষ্ক দিয়ে সে বড় বড় পদ ও পরিকল্পনা তৈরী করত ঐ মস্তিষ্ক থেকেই এ বেদনা দায়ক শাস্তির সূত্রপাত হবে। সূরা দুখানের উল্যেখিত আয়াতের শেষে
অর্থ: স্বাদ গ্রহন কর (তুমি পৃথিবীতে) ছিলে অভিজাত ও মর্যাদাবান (সূরা দুখান : ৪৯)
 উল্লেখিত আয়াত এ কথা স্পষ্ঠ করেছে যে, এ বেদনা দায়ক আযাবের হকদার হবেঐ সমস্ত কাফের নেত্রীবর্গ। যারা পৃথিবীতে বিশাল শক্তিধর ও মর্যাদার অধিকারী ছিল,পৃথিবীতে তাদের মর্যাদা ও বড়ত্ব হবে। আর হ্মমতার বড়ায়ে উন্মাদ হয়ে তারা ইসলামকে অবনত করতে এবং মুসলমানদেরকে ভূ-পৃষ্ঠ থেকে নিঃশ্চিহ্ন করার জন্য সর্বপ্রকার হাতিয়ার ব্যবহার করতে থাকবে। কোরআনের ভিবিন্ন স্হানে কাফের নেত্রীবর্গের চক্রান্ত ও চালবাজির বর্ননা এসেছে।
আল্লাহর বানী:
 অর্থ: "তারা নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে, আর আল্লহর নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কে বাচানোর জন্য তদবীর করেন।  আর আল্লাহর দৃড় তদবীরকারক" (সূরা আনফাল-৩০)
অন্যত্র এরশাদ করেন 
 অর্থঃ "তাদের পূর্ব যারা ছিল তারাও চক্রান্ত করছিল কিন্তু সমস্ত চক্রান্ত আল্লাহর ইখতিয়ারে" (সূরা রা'দ - ৪২)
  সূরা ইব্রাহীমে আল্লাহ্ তা'লা এরশাদ করেনঃ
অর্থঃ "তারা ভীষন চক্রান্ত করেছিল,কিন্তু আল্লাহর নিকট তাদের চক্রান্ত রহ্মিত রয়েছে,তাদের চক্রান্ত এমন ছিল না যাতে পাহাড় টলে যেত"(সূরা ইব্রাহীম -৪৬)
নূহ্ (আঃ) ৯৫০ বছর পর্যন্ত তার কাউমকে দাওয়াত দেওয়ার পর যখন তার প্রভূর নিকট আবেদন পেশ করলেন তখন ঐ আবেদনের একটি বিশেষ অংশ ছিল এই যে,
 অর্থঃ "আর তারা ভয়ানক চক্রান্ত করেছে" (সূরা নূহ্ -২২)
মূলত ইসলামের বিরুদ্ধে চক্রান্তকারীরা,ইসলামকে পরাজিত করার অপচেষ্টাকারীরা,মুসলমানকে নিঃশ্চিহ্ন কারীদেরকে ক্বিয়ামতের দিন ঐ বৃহৎ শক্তিধর আল্লাহ্ তাদেরকে এ বেদনাদায়ক শাস্তির মাধ্যমে অভিবাদন জানাবেন।
নিঃসন্দেহে এ বেদনাদায়ক  আযাব কাফেরদের জন্য।


 **************************************
 **************************************
         www.bahadurhossen24.com     
**************************************
**************************************

Wednesday, March 9, 2016

মানুষের হিসাব নিকাশের সময় নিকটবর্তী

No comments :

মানুষের হিসাব নিকাশের সময় নিকটবর্তী অথচ তারা বেখবর হয়ে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে


“মানুষের হিসাব নিকাশের সময় নিকটবর্তী অথচ তারা বেখবর হয়ে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে।” (সুরা আম্বিয়া, ২১ : ১)
সুতরাং যখন নির্ধারিত সময় আসবে এবং জগৎসমূহের স্রষ্টার সম্মুখে মানুষের দাঁড়ানোর সময় নিকটবর্তী হবে:

“শিংগায় ফুৎকার দেয়া হবে — একটিমাত্র ফুৎকার এবং পৃথিবী ও পর্বতমালা উত্তোলিত হবে ও চূর্ণ বিচূর্ণ করে দেয়া হবে।” (সুরা হাক্কাহ, ৬৯ : ১৩-১৪)
তখন যা অবশ্যম্ভাবী তা ঘটবে এবং বিচার দিবস নিকটে আনা হবে এবং প্রকৃত সত্যকে প্রকাশ করা হবে এবং চূড়ান্ত ঘন্টার আগমন ধ্বনিত হবে:

“এটা তো হবে কেবল এক মহা মহানাদ। সে মুহূর্তেই তাদের সবাইকে আমার সামনে উপস্থিত করা হবে।”(সুরা ইয়াসীন, ৩৬ : ৫৩)
এবং তারা
                        “কবর হতে তাদের পালনকর্তার দিকে ছুটে চলবে।” (সুরা ইয়াসীন, ৩৬ : ৫১)
দ্বিধাগ্রস্তভাবে এবং দ্রুততার সাথে, তারা বলবে:

“হায় আমাদের দুর্ভোগ! কে আমাদেরকে নিদ্রাস্থল থেকে উত্থিত করল? (তাদেরকে বলা হবে) : রহমান আল্লাহ তো এরই ওয়াদা দিয়েছিলেন এবং রাসূলগণ সত্য বলেছিলেন।” (সুরা ইয়াসীন, ৩৬ : ৫২)

“সুতরাং মৃদু গুঞ্জন ব্যতীত তুমি কিছুই শুনবে না।” (সুরা ত্বহা, ২০ : ১০৮)
তখন গলা শুকিয়ে যাবে সুতরাং

“এটা এমন দিন, যেদিন কেউ কথা বলবে না এবং কাউকে তওবা করার অনুমতি দেয়া হবে না।” (সুরা মুরসালাত, ৭৭ : ৩৫-৩৬)
এবং তাদের দৃষ্টি অবনমিত থাকবে এবং অবমাননা তাদেরকে গ্রাস করবে:


“সেই চিরজীবী চিরস্থায়ীর সামনে সব মুখমণ্ডল অবনমিত হবে এবং সে ব্যর্থ হবে যে জুলুমের বোঝা বহন করবে।” (সুরা ত্বহা, ২০ : ১১১)
এবং

“সেদিন কোন কোন মুখ উজ্জ্বল হবে আর কোন কোন মুখ হবে কালো।” (সুরা আলি ইমরান, ৩ : ১৬)
তখন মানুষ দুই দলে বিভক্ত হবে:

“একদল জান্নাতে এবং একদল জাহান্নামে প্রবেশ করবে।” (সুরা আশ শূরা, ৪২ : ৭)
অতপর, দুর্দশাগ্রস্ত ব্যক্তির জন্য তাদের দুরবস্থার জন্য দুর্ভোগ এবং তাদের শেষ অবস্থার করুণ পরিণতির জন্য তাদের উপর পুনরায় দুর্ভোগ।

“আর যদি আপনি দেখেন যখন তাদেরকে প্রতিপালকের সামনে দাঁড় করানো হবে। তিনি বলবেন : এটা কি বাস্তব সত্য নয়।” (সুরা আনআম, ৬ : ৩০)
তখন তারা শুধু একথাই বলবে:

“হ্যাঁ আমাদের প্রতিপালকের কসম।” (সুরা আনআম, ৬ : ৩০)
বাস্তবিকই তারা রাসূলের ডাকে সাড়া দেয়নি, কিন্তু তারা শপথ করত (যে তারা পুনরুত্থিত হবে না) যতক্ষণ তাদেরকে না দেখানো হবে এবং তাদের বিভ্রান্তি দূর করা না হবে, সুতরাং সৃষ্টির সূচনাকারী তাদের বলবেন:

“অতএব, তোমরা আস্বাদন কর, আমি কেবল তোমাদের শাস্তিই বৃদ্ধি করব।” (সূরা নাবা, ৭৮ : ৩০)

“যারা আল্লাহর প্রতি মিথ্যা আরোপ করে, কিয়ামতের দিন আপনি তাদের মুখ কালো দেখবেন। অহংকারীদের আবাসস্থল জাহান্নামে নয় কি?” (সুরা আ– ৩৯ : ৬০)
পুনরুত্থানে অবিশ্বাসী বস্তুবাদীরা, যারা বলত :

“আমাদের এ পার্থিব জীবনই জীবন, আমাদেরকে পুনরায় জীবিত হতে হবে না।” (সুরা আনআম, ৬ : ২৯)
অথবা যারা আল্লাহর রাসূলদের এবং তাদের আহ্বানকে বাধা দিয়েছিল, তারা শাস্তির এবং চূড়ান্ত ন্যায়বিচারের সেই দিনটিতে উপনীত, যেদিন

“কারও প্রতি জুলুম করা হবে না এবং তোমরা যা করবে, কেবল তারই প্রতিদান পাবে।” (সুরা ইয়াসীন, ৩৬ : ৫৪)
তারা তাদের চোখ, হৃদয়, কানকে সত্যের প্রতিটি আলো থেকে বিমুখ রেখেছিল। সেজন্য তাদের শাস্তি:

“আমি কেয়ামতের দিন তাদের সমবেত করব, তাদের মুখে ভর দিয়ে চলা অবস্থায়, অন্ধ অবস্থায়, মূক অবস্থায় এবং বধির অবস্থায়। তাদের আবাসস্থল জাহান্নাম।” (সুরা বনী ইসরাইল, ১৭ : ৯৭)
“হে আমার পালনকর্তা, আমাকে কেন অন্ধ অবস্থায় উত্থিত করলেন? আমি তো চক্ষুষ্মান ছিলাম। আল্লাহ বলবেন, এমনিভাবে তোমার কাছে আমার আয়াতসমূহ এসেছিল, অতঃপর তুমি সেগুলো ভুলে গিয়েছিলে। তেমনিভাবে আজ আমি তোমাকে ভুলে যাব।” (সুরা তোয়াহা, ২০ : ১২৫-১২৬)
তাদের হৃদয় অনুতাপে ক্ষতবিক্ষত হবে যাবে এবং

“যালিম সেদিন আপন হস্তদ্বয় দংশন করতে করতে বলবে, হায় আপসোস আমি যদি রাসূলের পথ অবলম্বন করতাম! হায় আমার দুর্ভাগ্য আমি যদি অমুককে বন্ধুরূপে গ্রহণ না করতাম!” (সুরা ফুরকান, ২৫ : ২৭)
এবং দুনিয়ার দিনগুলো সম্পর্কে পাপীরা তখন বলবে :

“হায় আফসোস এর ব্যাপারে আমরা কতই না ত্রুটি করেছি! তারা স্বীয় স্বীয় বোঝা পৃষ্ঠে বহন করবে। শুনে রাখ, তারা যে বোঝা বহন করবে, তা নিকৃষ্টতর বোঝা। পার্থিব জীবন ক্রীড়া ও কৌতুক ব্যতীত কিছুই নয়। পরকালের আবাস মুত্তাকীদের জন্য শ্রেষ্ঠতর। তোমরা কি বোঝ না?” (সুরা আনআম, ৬ : ৩১ – ৩২)
হায় সেই দিনটি কী ভয়ংকরই না হবে এবং এর ত্রাস কতই না ভীতিপ্রদ হবে! সেই ব্যক্তিই প্রকৃতপক্ষে মুক্তিপ্রাপ্ত হবে, যে ঐ দিনে মুক্তি পাবে এবং সেই ধ্বংসপ্রাপ্ত হবে যার পাপ তাকে ঐদিন ধ্বংস করবে। এ ধরনের দৃষ্টান্তের ব্যাপারে আমাদের সচেতন থাকতে হবে। তাই আসুন আমরা প্রত্যাবর্তন করি এবং নিজেদের আত্মাকে প্রশ্ন করি, তাকে আল্লাহর আনুগত্যে বাধ্য করি, একে পবিত্র করে তুলি এবং উৎসাহ সহকারে একাজে আত্মনিয়োগ করি।
*******************

Saturday, March 5, 2016

নিয়তের গুরুত্ব

No comments :
শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু 

নিয়তের অর্থঃ

নিয়ত আরবী শব্দ। এর বাংলা অর্থঃ ইচ্ছা করা, মনস্ত করা, এরাদা করা, সংকল্প করা। (মুনজিদ, ৮৪৯/ ফতহুল বারী, ১/১৭)
শব্দটি আমরা বাংলাভাষী লোকেরাও ব্যবহার করে থাকি। যেমন আমরা বলি: আমি এ বছর হজ্জ করার নিয়ত করেছি। অর্থাৎ ইচ্ছা করেছি মনস্থ করেছি।

নিয়তের গুরুত্বঃ

শরীয়তে নিয়তের গুরুত্ব অপরিসীম। ব্যক্তির আমল আল্লাহর নিকট গ্রহণীয় হয়না যতক্ষণে বান্দা তার নিয়ত সঠিক না করে নেয়। অর্থাৎ , আল্লাহর জন্যে তাঁর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে না করে নেয়। আল্লাহ বলেনঃ
5516724285_9a6ff436b8(তাদেরকে এছাড়া কোন নির্দেশ করা হয়নি যে, তারা খাঁটি মনে একনিষ্ট ভাবে আল্লাহর এবাদত করবে…)। (সূরা বাইয়্যিনাহ/৫)
নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ
“আমল সমূহ নিয়তের (ইচ্ছার) উপর নির্ভরশীল, আর প্রত্যেক ব্যক্তি তাই পাবে যা সে নিয়ত করবে। সুতরাং যে ব্যক্তি পার্থিব জীবনে সুখ-শান্তি লাভের উদ্দেশ্যে হিজরত করবে সে তাই পাবে। কিংবা কোন মহিলাকে বিবাহ করার উদ্দেশ্যে হিজরত করবে সে তাই পাবে“। (বুখারী, প্রথম হাদীস)
হাদীসটিতে নবীজী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর বক্তব্য স্পষ্ট যে, মানুষ তার নিয়ত অনুযায়ী প্রতিফল পায়। দৃষ্টান্ত স্বরূপ হিজরত। হিজরত অর্থ: ইসলামের বিধি-বিধান  পূর্ণ রূপে পালন করতে পারা যায়না এমন দেশ ছেড়ে সে দেশে যাওয়া যেখানে বিনা অসুবিধায় পালন করা যায়। অন্য কথায়, কুফরের দেশ ত্যাগ করে ঈমানের দেশে প্রত্যাবর্তন করা। [ফাতহুল বারী, ১/২১]
তাই কোন ব্যক্তি যদি এ কারণে দেশ ত্যাগ করে যে, সে যে দেশে যাচ্ছে সেখানে যাওয়ার তার উদ্দেশ্যে হল কোন রমণীকে বিবাহ করা বা দুনিয়াবী কোন সুবিধা অর্জন করা, তাহলে সে তাই পাবে। হিজরতের ফলে কোন নেকী পাবেনা। যদি সে ঈমান বাঁচানোর উদ্দেশ্যে হিজরত করতো, তাহলে নেকী পেত। কাজ একই কিন্তু নিয়তের পরিবর্তনের কারণে নেকী পাওয়া এবং না পওয়া নির্ভর  করছে।

প্রকৃত নিয়ত হচ্ছে:

ইবনুল কাইয়ুম (রাহেঃ) বলেনঃ
“নিয়ত হচ্ছে, কোন কিছু করার ইচ্ছা করা এবং সংকল্প করা। উহার স্থান হচ্ছে অন্তর যবানের সাথে আসলে তার কোন সম্পর্ক নেই। এ কারণে না তো নবীজী হতে আর না কোন সাহাবী হতে নিয়তের শব্দ বর্ণিত হয়েছে”। (ইগাসাতুল্ লাহ্ফান, ১/২১৪)
সত্য প্রিয় ভাই! হ্যাঁ, প্রকৃতপক্ষে নিয়তের স্থান হচ্ছে অন্তর মুখে বলা বা পড়ার সাথে এর কোন সম্পর্ক নেই। উদাহরণ স্বরূপ, ধরুন আপনার গ্রামে মসজিদ উন্নতি কল্পে জালসা হচ্ছে। আপনি জালসায় আগত আলেমদের আলোচনা শোনার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হলেন। সাথে এক শত টাকাও নিলেন। সভা শেষে ১০০ টাকা দান করে বাড়ি ফিরলেন। বলুন তো, আপনি 
যে এ নেকীর কাজটি করলেন এর জন্য কি আপনাকে মুখে আরবী বা  বাংলায় এরূপ বলতে হল কি যে, হে আল্লাহ! আমাদের গ্রামে মসজিদের উন্নতি কল্পে আয়োজিত জালসায়, আগত উলামাদের আলোচনা শোনার উদ্দেশ্যে এবং এক শত টাকা দান করার উদ্দেশ্যে জালসা শুনতে উপস্থিত হলাম বা হতে যাচ্ছি ? যদি কেউ এরূপ বলে তাহলে অনেকে তাকে মাথা খারাপ বলে মন্তব্য করবে। নামাযের লাইনে দাঁড়িয়ে আমরা কিন্তু অজান্তে আল্লাহকে আরবীতে তাই বলে যাচ্ছি। বলছিঃ হে আল্লাহ ! অমুকের পিছনে অমুক নামায পড়তে, কিবলামুখী হয়ে উপস্থিত হয়েছি। নামাযী যখন নামাযের উদ্দেশ্যে মসজিদে প্রবেশ করে সেটাই নামাযের নিয়ত হয়। অতঃপর যখন সে যহর, আসর বা মাগরিবের নামায সম্পাদনের জন্য দাঁড়ায় তখন সেটাই তার উক্ত নামাযের নিয়ত হয়। অনুরূপ সুন্নত, নফল, ১, ২, ৩, বা চার রাকাআত পড়ার তার অন্তরে যে ইচ্ছা জাগে সেটাই নিয়ত। মুখে শব্দ দ্বারা কোন কিছু বলার প্রয়োজন নেই।
আরবী বা বাংলায় বিশেষ শব্দ দ্বারা নিয়ত পড়া: পূর্বের আলোচনা হতে সুস্পষ্ট যে নিয়তের জন্য আরবী বা বাংলায় কিছু বলতে হয় না। তবুও অনেকে আরবীতে এরূপ নিয়ত পড়ে থাকে যেমন ফজর নামাযের নিয়ত কালে বলেঃ ‘নাওয়াইতু আন্ উসাল্লিয়া লিল্লাহি তাআলা রাকাআতাই সালাতিল  ফাজরে ফারযুল্লাহে তাআলা মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ শারীফাতে- আল্লাহু আকবার’।

নিয়তের বিষয়টির সঠিকতা  বিশ্লেষণার্থে সহীহ দলীল ভিত্তিক আরো কিছু আলোচনা করার প্রয়াস করা  হলঃ

প্রিয় পাঠক! নামায তথা অযু, রোযা, যাকাত, দান-খয়রাত কোন ক্ষেত্রেই প্রিয় নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এরকম শব্দ পড়ে নিয়ত করেন নি। কোন সাহাবী বা তাবেয়ী আর না চার ইমামদের কেউ এরকম নিয়ত পড়তেন। তাই যে আমল নবীজী কিংবা সালাফে সালেহীন দ্বারা প্রমাণিত নয় সে আমল অবশ্যই একটি শরীয়তে আবিষ্কৃত নতুন আমল যা, বিদআত। নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ
“যে ব্যক্তি শরীয়তে নতুন কিছু আবিষ্কার করল যা, শরীয়তের অংশ নয় তা বর্জনীয়’’। (মুসলিম)
নামাযের শুরু “তকবীরে তাহরীমা” এর পূর্বে নিয়ত পড়া হয়। এখন বিষয়টির সত্যতা যাঁচাই করার জন্য প্রত্যেক নামাযী ভাইকে এতটুকুই অনুরোধ করব যে, নবীজীর নামাযের বর্ণনা প্রত্যেক হাদীসের বইতে বিস্তারিত এসেছে। যদি এধরনের নিয়ত হাদীসে থাকে তো যে কোন হাদীসের বই পড়ে দেখতে পারেন। অবশ্যই কোথাও পাবেন না।
নিম্নে নামায শুরু করার সম্পর্কে কয়েকটি হাদীস বর্ণনা করা হচ্ছে যা দ্বারা বুঝা যেতে পারে যে, আল্লাহু আকবার বলার পূর্বে মুখে নিয়ত পড়ার প্রমাণ আছে না নেই।
# ইবনে উমার (রা:) বলেনঃ নবীজী যখন নামাযে দাঁড়াতেন; তখন তিনি তাঁর হাত দুটি বাহু বরাবর উঠাতেন। অতঃপর তকবীর ‘আল্লাহু আকবার’ বলতেন। (মুসলিম, অধ্যায়ঃ নামায, অনুচ্ছেদ নং ৯ হাদীস নং ৮৬০-৮৬১)
হাদীসটি স্পষ্ট যে, তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তকবীরের মাধ্যমে নামায শুরু করতেন। নিয়ত পড়ে তকবীর দিতেন না।
# নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নামায ভুলকারী জনৈক সাহাবীকে নামায শিক্ষা দেওয়ার সময় বলেনঃ ‘‘যখন নামাযে দাঁড়াবে তখন তকবীর দিবে’’। (বুখারী, নং৭৯৩)
এখানেও হাদীস স্পষ্ট যে, নামাযে দাঁড়ালে তকবীর দিয়ে নামায শুরু করতে হয়। কেউ যদি নিয়ত পড়ে শুরু করে তাহলে হাদীসের বরখেলাফ তো অবশ্যই হয়।
# নবীজী আরো বলেনঃ ‘‘নামাযের চাবি পবিত্রতা অর্জন, (পার্থিব কাজ-কর্ম, কথা-বার্তা ইত্যাদি) তকবীর বলার মাধ্যমে হারাম হয়, (আর সে সকল হালাল হয়) সালামের মাধ্যমে’’। (তিরমিযী, অধ্যায় পবিত্রতা অর্জন, প্রথম হাদীস)
এ হাদীসে নামাযের শুরু এবং শেষ বর্ণিত হয়েছে। শুরু হচ্ছে তকবীরে তাহরীমা তথা আল্লাহু আকবার বলা। নিয়ত পড়া নয়।
উল্লেখ্য যে, কায়েদা বগদাদীতে নিয়ত লেখা আছে বলে কিছু অজ্ঞ লোক তাই দলীল মনে করে এবং আমল করে। এটি চরম ভুল। কায়েদা বগদাদী শরীয়তের কোন দলীলের বই নয়, উহা কেবল একটি আরবী বর্ণ পরিচয়ের বই। যেমন বাংলা বর্ণ পরিচয়ের জন্য শিশু শিক্ষা, বাল্য পাঠ বা অন্য কোন বই। শরীয়তের দলীল হচ্ছে কুরআন এবং হাদীস।

মুখে উচ্চারণকৃত নিয়তের ক্ষতিকারক দিক সমূহঃ

  • অনেক ভাইকে নামাযের কথা বললে, বলেঃ নিয়তই জানিনা নামায কিরূপে পড়ব? অর্থাৎ সে মনে করে আরবীতে তৈরি করা এসব নিয়ত মুখস্ত না করলে নামায হয় না। কি আশ্চার্য ! আবিষ্কৃত বিদআতী কিছু শব্দ মানুষকে নামায থেকে দুরে সরায় !
  • মকতব মাদরাসায় অনেক ছাত্রকে ডজনেরও অধিক আরবী নিয়ত মুখস্ত করানো হয়, অথচ দেখা যায় সে ছাত্রটি এখনও দু চারটি সূরা মুখস্ত করে নি। বলুন তো, এ ক্ষেত্রে নিয়ত মুখস্ত করানো জরূরী না সূরা মুখস্ত করানো জরূরী?
  • যেহেতু নিয়তের প্রচলিত বাক্যগুলি আরবী ভাষায় আর আমরা আরবী বুঝি না। অন্যদিকে নামাযের রাকাআত সংখ্যা ভিন্ন ভিন্ন, অনুরূপ নামাযও বিভিন্ন। যেমন ফরয, সুন্নত এবং নফল। আর নিয়তে বর্ণিত থাকে এই সব ব্যাপার। তাই নিয়তের শব্দ সমূহে সামান্য পার্থক্য থাকে। এবার মুখস্ত করার সময় এবং নামাযের পূর্বে পড়ার সময় অনেকের গোলমাল বেঁধে যায়, ফলে এই সমস্যায় পড়ে কেউ মাদরাসার পড়া ছাড়ে আর অনেকে রাকাআত ছড়ে। অর্থাৎঃ নামাযী মসজিদে ঢুকে দেখে যে, ইমাম সাহেব সূরা ফাতেহা পড়ার পর অন্য ছোট সূরা পড়তে শুরু করেছে, তখন সে তাড়াতাড়ি নিয়ত পড়তে গিয়ে গোলমালে পড়ে। দেখা যায় ইমাম সাহেব রুকূতে চলে গেছেন আর সে হাত খাড়া করে নিয়তের গোলমাল ঠিক করতে ব্যস্ত। আর অনেক সময় নিয়ত পড়তে গিয়ে সূরা ফাতেহা না পড়ে রুকূতে শামিল হয়। সূরা ফাতেহা যা পড়ার শক্ত নির্দেশ এসেছে সে তা পড়তে অনিচ্ছুক কিন্তু তৈরিকৃত নিয়ত পড়তে এ অবুঝ খুবই সচেতন!খুবই আগ্রহী!!