নামাজ বেহেস্তের চাবী

মোঃবাহাদুর হোসেন বাদল

Showing posts with label জাহান্নামের আগুন. Show all posts

Saturday, April 9, 2016

জাহান্নামের আগুন

No comments :
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জাহান্নামের আগুন 


জাহান্নামের বেশি শাস্তি আগুনেরই হবে,যে ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) এরশাদ করেছেন যে,জাহান্নামের আগুন দুনিয়ার আগুনের চেয়ে সত্তর গুন গরম বেশি হবে (মুসলিম)।
কোরআনের কোন কোন স্হানে তাকে "বড় আগুন" নামে আখ্যায়িত করা হয়েছে (সূরা আলা ১২)
আবার কোথাও "আল্লাহর প্রজ্জলিত অগ্নি" নামে আখ্যায়িত করা হয়েছে (সূরা হুমাজা -৫)
আবার কোথাও "লেলিহান জাহান্নাম " ও বলা হয়েছে 
(সূরা লাইল-১৪)
আবার কোথাও "জলন্ত অগ্নি"ও বলা হয়েছে (সূরা গাসিয়া-৪)
শাস্তি হিসাবে যদি মানুষকে জ্বালিয়ে দেয়াই উদ্দেশ্য হত,তাহলে দুনিয়ার আগুনই যতেষ্ট ছিল যাতে মানুষ হ্মনিকের মধ্যেই জ্বলে শেষ হয়ে যায়। কিন্তু জাহান্নামের আগুনত মূলত কাফের ও মুশরিককে বিশেষ ভাবে আযাব দেওয়ার জন্যই উত্তপ্ত করা হয়েছে, তাই তা পৃথিবীর আগুনের চাইতে কয়েক গুন বেশি গরম হওয়া সত্বেও এ আগুন জাহান্নামিদেরকে একেবারে শেষ করে দিবে না,বরং তাদেরকে ধারাবাহিক ভাবে আযাবে নিমজ্জিত করে রাখবে।
আল্লাহ্‌ বলেনঃ
অর্থঃ"(জাহান্নাম) সে মরবেও না বাচবেও না "(সূরা ত্বা-হা-৭৮)
রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) কে সপ্ন যোগে এক বিস্রি আকৃতি ও বিবর্ন চেহারার লোক দেখানো হল,সে আগুন জ্বালিয়ে যাচ্ছে এবং তাকে উত্তপ্ত করছে,রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) জিবরীল (আঃ) কে জিজ্ঞেস করলেন এ কে? জিবরীল উত্তরে বললেনঃ তার নাম মালেক সে জাহান্নামের দারওয়ান (বোখারী)
জাহান্নামের আগুনকে আজও উত্তপ্ত করা হচ্ছে,কিয়ামত পর্যন্ত তাকে উত্তপ্ত করা হতে থাকবে। জাহান্নামিদের জাহান্নাম যাওয়ার পরও তাকে উত্তপ্ত করার  ধারাবাহিকতা চলতে থাকবে।
আল্লাহর বানীঃ

وَمَن يَهدِ اللَّهُ فَهُوَ المُهتَدِ ۖ وَمَن يُضلِل فَلَن تَجِدَ لَهُم أَولِياءَ مِن دونِهِ ۖ وَنَحشُرُهُم يَومَ القِيٰمَةِ عَلىٰ وُجوهِهِم عُميًا وَبُكمًا وَصُمًّا ۖ مَأوىٰهُم جَهَنَّمُ ۖ كُلَّما خَبَت زِدنٰهُم سَعيرًا

অর্থঃ "আল্লাহ্‌ যাকে পথ প্রদর্শন করেন, সেই তো সঠিক পথ প্রাপ্ত  এবং যাকে পথ ভ্রষ্ট করেন, তাদের জন্যে আপনি আল্লাহ্‌ ছাড়া কোন সাহায্যকারী পাবেন না। আমি কিয়ামতের দিন তাদের সমবেত করব তাদের মুখে ভর দিয়ে চলা অবস্থায়, অন্ধ অবস্থায় এবং বধির অবস্থায়। তাদের আবাস্থল জাহান্নাম। যখনই নির্বাপিত হওয়ার উপক্রম হবে আমি তখন তাদের জন্যে অগ্নি  আরও বৃদ্ধি করে দেব।(সূরা বানী ইসরাঈল-৯৭)
জাহান্নামর আগুন কত উত্তপ্ত হবে তার হুবহু পরিমান বর্ননা করা অসম্ভব,তবে রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) এর বর্ননা অনুযায়ী জাহান্নামের আগুনের তাপদাহ পৃথিবীর আগুনের চেয়ে সত্তর গুন বেশি হবে।সাধারন  অনুমানে পৃথিবীর আগুনের উত্তাপ ২০০০ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড ধরা হলে ' জাহান্নামের আগুনের তাপমাত্রা হয় এক লহ্ম ৩৮ হাজার ডিগ্রী সেন্টিগ্রে, এ কঠিন  গরম আগুন দিয়ে জাহান্নামিদের পোষাক ও তাদের বিছানা তৈরি করা হবে, ঐ আগুন দিয়ে তাদের ছাতা ও তাবু তৈরি করা হবে।কঠিন আযাবের এ নিকৃষ্ট স্হানে মানুষের জীবন যাপন কেমন হবে, যারা নিজের হাতে সামান্য একটি আগুনের কয়লাও রাখার হ্মমতা রাখেনা? কিয়ামতের দিন জাহান্নামের আগুন দেখে সমস্ত নবীগন এত ভীত হবে তারা বলবে যে,
হে আমার প্রভু!  আমাকে বাচাও, হে আমার প্রভু! আমাকে বাচাও। এবলে আল্লাহর নিকট স্বীয় জীবনের নিরাপত্তা কামনা করবে। উম্মুল মু'মেনীন আয়েশা সিদ্দিকি (রাঃ) জাহান্নামের আগুনের কথা স্মরণ করে পৃথিবীতে কাঁদতেন, পৃথিবীতে থাকা অবস্থায়ই জান্নাতের সুসংবাদ প্রাপ্ত দশ জন সাহাবীর একজন ওমর (রাঃ) কোরআন তিলোয়াত করার সময় জাহান্নামের আযাবের কথা আসলে বেহুস হয়ে যেতেন, মুয়াজ বিন জাবাল,আবদুল্লাহ্ বিন রাওয়াহা,ওবাদা বিন সামেত (রাঃ) দের মত সম্মানিত সাহাবাগন জাহান্নামের আগুনের কথা স্মরণ করে এত কাদতেন যে,তারা কিংকর্তব্যবিমূঢ় যেতেন। আবদুল্লাহ্ বিন মাসউদ (রাঃ) কামারের দোকানের পাশে দিয়ে যাওয়ার সময় সেখানে প্রজ্জলিত আগুন দেখে জাহান্নামের কথা স্মরণ করে কাদতে থাকতেন।
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ্‌ তা'লা এরশাদ করেনঃ
অর্থঃ"তোমার প্রতিপালকের শাস্তি অত্যন্ত ভয়াবহ"
(সূরা বনী ইসরাঈল-৫৭)
আল্লাহর স্বীয় দয়া ও অনুগ্রহে সমস্ত মুসলমানদেরকে জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তি দিন ""আমিন""