নামাজ বেহেস্তের চাবী

মোঃবাহাদুর হোসেন বাদল

Showing posts with label ইসলামে নারীর মর্যাদা. Show all posts

Thursday, April 21, 2016

ইসলামে নারীর মর্যাদাঃ

No comments :
ফেসবুক গ্রুপ এ জয়েন করতে এখানে ক্লিক কারুন

ইসলামে নারীর মর্যাদাঃ

ঈমান ও আমল অনুযায়ী মর্যাদা ও প্রতিদানের দিক থেকে নারী-পুরুষে ভেদাভেদ নেই। উভয়ে আল্লাহর নিকট সমান। নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, "নারীরা তো পুরুষদের সহোদর"।(আবু দাঊদ)। নারী হকদার হলে তা দাবী করার অধিকার আছে তার, অথবা নিপীড়িত হলে তা থেকে মুক্ত হওয়ার অধিকারও আছে। কেননা ইসলাম ধর্মে সম্বোধন সূচক যে সকল শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে তাতে নারী পুরুষের সাথেই। তবে যে সমস্ত বিষয়ে উভয়ের মাঝে পার্থক্য উল্লেখ করা হয়েছে তা অবশ্যই ভিন্ন। ইসলামের অবশিষ্ট ভিধি-ভিধানের তুলনায় সেই পার্থক্য খুবই সামান্য। তাছাড়া ইসলাম সৃষ্টিগত ও শক্তি-সামর্থগত দিক থেকে নারী-পুরুষের বৈশিষ্টের প্রতি গুরুত্বসহ লক্ষ্য রেখেছে। আল্লাহ্‌ বলেনঃ
 أَلا يَعلَمُ مَن خَلَقَ وَهُوَ اللَّطيفُ الخَبيرُ
"সে কি জানেনা কে সৃষ্টি করেছে? আর তিনিই সুক্ষ্মদর্শী সংবাদ রক্ষক"। (সূরা মূলক)
নারীর কিছু কর্ম আছে যা তার জন্যেই বিশেষ। পুরুষের কিছু কর্ম আছে যা তার জন্যেই বিশেষ। একজনের সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অপরের অনুপ্রবেশ সংসার জীবনের ভারসাম্য নষ্ট করে দিবে। নারী নিজ গৃহে অবস্হান করলেও তাকে পুরুষের সমপরিমাণ প্রতিদান দেয়া হবে। আসমা বিনতে ইয়াযীদ (রাঃ) থেকে বর্নিত, একদা তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট আগমন করলেন।  তখন নবীজি সাহাবায়ে কেরামকে নিয়ে বসে ছিলেন। আসমা বললেন, আপনার জন্য আমার বাবা-মা কোরবান হোক! আমি নারী সমাজের প্রতিনিধি হিসেবে আপনার নিকট আগমন করেছি। আপনাকে জানাচ্ছি যে, আমার প্রান আপনার জন্য উৎসর্গ। পূর্ব থেকে পশ্চিম প্রান্তের নারী মাত্রেই যে কেউ আমার এই আগমনের সংবাদ শুনুক বা না শুনুক সে আমার অনুরুপ মত পোষণ করবে। নিঃসন্দেহে আল্লাহ্‌ আপনাকে সত্য দ্বীনসহ নারী-পুরুষ উভয় শ্রেণীর নিকট প্রেরন করেছেন। তাই আমরা আপনার প্রতি এবং সেই মা'বুদের ঈমান এনেছি যিনি আপনাকে প্রেরন করেছেন। আমরা নারী সমাজ চার দেয়ালের ঘেরার মধ্যে আপনাদের গৃহের মধ্যে বসে বন্দি অবস্হায় দিন যাপন করি, আপনাদের প্রবৃত্তি চরিতার্থ করি, আপনাদের সন্তান গর্ভে ধারন করি। আর আপনারা পুরুষ সমাজকে আমাদের উপর মর্যাদাবান করা হয়েছে। জুমআ, জামাআত,রুগির পরিচর্যা, জানাযায় অংশ গ্রহন, হাজ্জের পর হাজ্জ সম্পাদন এবং সর্বোত্তম কাজ আল্লাহর পথে জিহাদে আপনারা অংশ নিয়ে থাকেন। আপনাদের মধ্যে কোন পুরুষ হাজ্জ বা উমরা বা জিহাদের পথে বের হলে আমরা আপনাদের ধন-সম্পদ সংরহ্মন করে থাকি। আপনাদের সন্তানদের লালন-পালন করে থাকি। অতএব হে আল্লাহর রাসূল! (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আপনারা যে প্রতিদান পেয়ে থাকেন তাতে কি আমরা শরীক হব না? বর্ননাকারী বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সাহাবীদের প্রতি পূরাপূরি মুখ ফিরালেন, তারপর বললেন, তোমরা কি কখনও শুনেছ ধর্মীয় বিষয়ে এ নারীর প্রশ্নের চেয়ে উত্তম কথা বলতে কোন নারীকে?  তারা বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা ভাবতেই পারিনি একজন নারী এত সুন্দর কথা বলতে পারে। এবার নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মহিলার দিকে দৃষ্টিপাত করলেন অতঃপর বললেন, ওহে নারী তুমি ফিরে যাও এবং তোমার পিছনের সকল নারীকে জানিয়ে দাও যে, তোমাদের কারো নিজ স্বামীর সাথে সদ্ভাবে সংসার করা,স্বামীর সন্তুষ্টি অনুসন্ধান করা এবং তার মতামতের অনুসরণ করা উপরোক্ত সকল ইবাদতের ছওয়াবের বরাবর। (বায়হাকী) 
নবী (সাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি দু'জন কন্যা বা দু'জন ভগ্নি বা নিকটাত্মীয় দু'জন নারীর ভরন-পোষণ বহন করবে এমনকি আল্লাহ্‌ তাদের উভয়কে যথেষ্ট করে দিবেন, তবে তারা জাহান্নাম থেকে বাঁচার জন্য পর্দা স্বরুপ হয়ে যাবে। (আহমাদ, ত্বাবরানী, হাদীসটি হাসান, বিঃদ্রঃ সহীহ তারগীব তারহীব হা/২৫৪৭)
♦♦নারীদের কতীপয় বিধি-বিধানঃ♦♦
গায়র মাহরাম নারীর সাথে নির্জনে মিলিত হওয়া পুরুষের জন্য হারাম। নবী (সাঃ) বলেন, "মাহরাম ব্যতীত কোন পুরুষ যেন কোন নরীর সাথে নির্জনে মিলিত না হয়"।(বুখারী ও মুসলিম)
মসজিদে গিয়ে নারীর নামাজ আদায় করা বৈধ। কিন্তু ফেৎনার আশংকা থাকলে মসজিদে যাওয়া উচিত নয়। আয়েশা (রাঃ) বলেন, নারীরা এখন যা করছে নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তা দেকলে হয়তো তাদেরকে মসজিদে যেতে নিষেধ করতেন। যেমনটি বানী ইসরাঈলের নারীদেরকে নিষেধ করা হয়েছিল। (বুখারী ও মুসলিম) পুরুষ মসজিদে গিয়ে নামাজ আদায় করলে যেমন তাকে বহুগুন ছওয়াব দেয়া হয়; নারী নিজ গৃহে নামাজ আদায় করলেও তাকে অনুরুপ ছওয়াব দেয়া হবে। জৈনক নারী নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট এসে আবেদন করল হে আল্লাহর রাসূল! আপনার সাথে আমি নামাজ আদায় করতে ভালবাসি। রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আমি জানি তুমি আমার সাথে নামাজ আদায় করতে ভালবাস। কিন্তু তোমার জন্যে হ্মুদ্র কুঠরিতে নামাজ পড়া, বাড়িতে নামাজ পড়ার চাইতে উত্তম। আর বাড়িতে নামাজ পড়া মহল্লার মসজিদে নামাজ পড়ার চাইতে উত্তম। আর মহল্লার মসজিদে নামাজ পড়া আমার মসজিদে (মসজিদে নববীতে) নামাজ পড়ার চেয়ে উত্তম। (আহমাদ, হাদীসটি হাসান বিঃদ্রঃ সহীহ তারগীব তারহীব হা/৩৪০) নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আরো বলেন, নারীদের সর্বোত্তম মসজিদ হচ্ছে তার ঘরের সবচেয়ে নির্জনতম স্থান।(আহমাদ, হাদীসটি হাসান বিঃদ্রঃ সহীহ তারগীব তারহীব হা/৩৪১) 
মাহরাম সাথী না পেলে নারীর হাজ্জ উমরা করা ফরয নয়। কেননা মাহরাম ব্যতীত নারীর সফর বৈধ নয়। নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, কোন নারী মাহরাম ব্যতীত যেন তিন দিনের অধিক দূরত্ব স্হানে সফর না করে। অপর বর্ননায় একদিন ও একরাতের অধিক দূরত্ব সপর করতে নিষেধ করা হয়েছে। (বুখারী ও মুসলিম)
নারীর কবর যিয়ারত ও লাশের সাথে গমন নিষেধ। নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, অধিকহারে কবর যিয়ারতকারী নারীদের উপর আল্লাহর লা'নত। (তিরমিযী) ইম্মে আত্বিয়া (রা) বলেন, জানাযার লাশের সাথে চলতে আমাদেরকে নিষেধ করা হয়েছে। কিন্তু এ ব্যাপারে আমাদের উপর কঠোরতা আরোপ করা হয়নি। (বুারী ও মুসলিম)
নারী চুলে যেকোন রং ব্যবহার করতে পারে, তবে বিবাহের প্রস্তাবকারী পুরুষকে ধোকা দেয়ার উদ্দেশ্য না থাকলে কালো রং ব্যবহার করা মাকরূহ।
উত্তরাধিকার সম্পদে নারীর জন্যে আল্লাহ যে অংশ নির্ধারন করেছেন তা তাকে প্রদান করা ওয়াজীব; তা থেকে তাকে বঞ্চিত করা হারাম। নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, যে ব্যক্তি উত্তরাধীকারীকে প্রাপ্য মীরাছ থেকে বঞ্চিত করবে, কিয়ামত দিবসে আল্লাহ্‌ তাকে জান্নাতের মীরাছ থেকে বঞ্চিত করবেন।(ইবনে মাজাহ্)
স্বামীর উপর ওয়াজীব হচ্ছে স্ত্রীর প্রয়োজনিয় ব্যয়ভার বহন করা। যা ছাড়া স্ত্রী চলতে পারবেনা যেমন- খাদ্য, পানীয়, বস্ত্র ও বাসস্থান প্রভৃতির উত্তমভাবে ব্যবস্হা করা। আল্লাহ্ তা'আলা বলেনঃ
 لِيُنفِق ذو سَعَةٍ مِن سَعَتِهِ ۖ وَمَن قُدِرَ عَلَيهِ رِزقُهُ فَليُنفِق مِمّا ءاتىٰهُ اللَّهُ
"বিত্তশালী ব্যক্তি তার বিত্ত অনুযায়ী ব্যয় করবে। যে ব্যক্তি সিমীত পরিমাণে রিযিকপ্রাপ্ত, সে আল্লাহ যা দিয়েছেন তা থেকে ব্যয় করবে"।(সূরা আত্ব-ত্বালাক-৭)
নারীর স্বামী না থাকলে তার পিতা বা ভ্রাতা বা পুত্রের উপর আবশ্যক হচ্ছে তার খরচ বহন করা। নিকটাত্মীয় না থাকলে ুলাকার স্হানীয় লোকদের তার ভরন-পোষনের ব্যবস্হা করা মুস্তাহাব। কেননা নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, বিধবা এবং অভাবী-মিসকিনদের প্রয়োজন পূরনে প্রচেষ্টাকারী আল্লাহর পথে মুজাহীদের ন্যায় অথবা রাত্রে তাহাজ্জুদ আদায়কারী ও দিনে নফল সিয়াম আদায়কারী ন্যায় প্রতিদান লাভ করবে।(বুখারী ও মুসলিম)
তালাকপ্রাপ্তা নারী বিবাহ না করলে তার শিশু সন্তানের লালন-পালন করার হকদার তারই বেশী। আর যত দিন শিশু মায়ের কোলে থাকবে ততদিন শিশুর ভরন-পোষন চালানো পিতার উপর ওয়াজীব।
নারীকে প্রথমে সালাম দেয়া মুস্তাহাব নয়; বিশেষ করে সে যদি যুবতী হয় বা তাকে সালাম দিলে ফেৎনার আশংকা থাকে।
প্রতি শুক্রবার (সপ্তাহে একবার) নারীর নাভীমূল ও বগল পরিষ্কার করা এবং নখ কাটা মুস্তাহাব। তবে চল্লিশ দিনের বেশী দেরী করা নাজায়েয।
মুখমন্ডলের চুল উঠানো হারাম- বিশেষ করে ভ্রুযুগলের চুল উপড়ানো নিষেধ। কেননা নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, যে নারী চুল উপড়ানোর কাজ করে এবং যার উপড়ানো হয় গার উপর আল্লাহর লা'নত।(আবু দাউদ)
শোক পালনঃ মৃতের জন্য তিন দিনের বেশী শোক পালন করা কোন নারীর জন্য জায়েয নেই। তবে মৃত ব্যক্তি স্বামী হলে চার মাস দশ দিন শোক পালন করা ওয়াজিব। নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, আল্লাহ্‌ এবং শেষ দিবসে বিশ্বাসী নারীর তার স্বামী ব্যতীত কোন মৃত ব্যক্তির জন্য  তিন দিনের বেশী শোক পালন করা হালাল নয়। (মুসলিম) শোক পালনের জন্য নারী নিজের সৌন্দর্য গ্রহণ, যাফরান ইত্যাদির সুগন্ধি লাগানো থেকে বিরত থাকবে। যে কোন ধরনের গয়না, রঙিন লাল, হলুদ ইত্যাদি কাপড় পরিধান করবে না। মেহেদি বা রং (মেকআর) কালো সুরমা বা সুগন্ধিযুক্ত তৈল ব্যবহার করবেনা। তবে নখ কাটা,  নাভীমূল পরিষ্কার করা,  গোসল করা জায়েয আছে। যে গৃহে স্বামী মারা গেছে সেখানেই নারীর ইদ্দত পালন করা ওয়াজিব। একান্ত প্রয়োজন ব্যতীত সেই গৃহ থেকে বের হওয়া হারাম। কোন প্রয়োজনে বের হতে চাইলে দিনের বেলায় বের হবে।
পর্দাঃ নারী নিজ গৃহ থেকে বের হলে সমস্ত শরীর চাদর বা বোরকা দ্বারা আবৃত করা ওয়াজিব। শরীয়ত সম্মত পর্দার শর্তাবলীঃ (১) নারী তার সমস্ত শরীর ডেকে দেবে। (২) পর্দার পোষাকটি যেন নিজেই সৌনর্য না হয়। (৩) পর্দার কাপড় মোটা হবে পাতলা নয়। (৪) প্রশস্ত ঢিলা-ঢালা হবে; সংকির্ন হবে না। (৫) আতর সুভাশ মিশ্রিত হবে না। (৬) কাফের নারীদের পোষাকের সাথে সদৃশপূর্ন হবে না। (৭) পুরুষের পোষাকের সাথে সাদৃশ্যপূর্ন হবে না।
নারী যাদের সাথে পর্দা করবে বা করবে না তারা তিন শ্রেনীর লোকঃ
(১) স্বামী তার সাথে কোন পর্দা নেই। স্বামী যেভাবে ইচ্ছা স্ত্রীকে দেখতে পারে। (২) নারী এবং মাহরাম পুরুষ, সাধারনত নারীর শরীরের যে অংশ বাইরে থাকে এরা তা দেখতে পারবে। যেমনঃ মুখমন্ডল, মাথার চুল, কাধ, হাত, বাহু, পদযুগল ইত্যাদি। (৩) অন্যান্য পুরুষ(পরপুরুষ) একান্ত প্রয়োজন ছাড়া এরা নারীর শরীরের কোন অংশ দেখতে পাবে না। যেমনঃ বিবাহ ও চিকিৎসার উদ্দেশ্যে নরীকে দেখা জায়েয। নারীর সৌন্দর্য তার মুখমন্ডলেই। তাই মুখমন্ডল দেখেই বেশীর ভাগ মানুষ ফেৎনায় জড়িয়ে পড়ে। ফাতেমা বিনতে মুনযের (রাঃ) বলেন, " আমরা পরপুরুষের সামনে মুখমন্ডল ঢেকে ফেলতাম"। (হাকেম) আয়শা (রাঃ) বলেন, "আমরা ইহরাম অবস্হায় বিদায় হাজ্জে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সাথে ছিলাম। উষ্টারোহী পুরুষরা আমাদের নিকট দিয়ে অতিক্রম করত। তারা আমাদের নিকটবর্তী হলে আমরা মাথার উপরের উড়নাকে মুখমন্ডলের উপর ঝুলিয়ে দিতাম। ওরা চলে গেলে আবার মুখমন্ডল খুলে দিতাম"। (আবু দাউদ)
ইদ্দতঃ ইদ্দত কয়েক প্রকারঃ
(১) গর্ভবতী নারীর ইদ্দতঃ গর্ভবতী স্ত্রীকে তালাক দেয়া হোক বা তার স্বামী মৃত্যু বরন করুক গর্ভের সন্তান প্রসব হলেই ইদ্দত শেষ।
(২) যে নারীর স্বামী মারা গেছেঃ তার ইদ্দত হচ্ছে চার মাস দশ দিন।
(৩) হায়েয অবস্হায় যাকে তালাক দেয়া হয়েছেঃ তার ইদ্দত হচ্ছে তিন হায়েয। তৃতীয় হায়েয শেষ হওয়ার পর পবিত্রতা শুরু হলেই গার ইদ্দত শেষ।
(৪) পবিত্রাবস্হায় যাকে তালাক দেয়া হয়েছেঃ তার ইদ্দত হচ্ছে তিন মাস। রেজঈ তালাকের ইদ্দত পালনকারীনির উপর ওয়াজিব হচ্ছে স্বামীর কাছেই থাকা। এই ইদ্দত চলাবস্হায় স্বামী তার যেকোন অঙ্গ দেখার ইচ্ছা করলে বা তার সাথে নির্জন হতে চাইলে তা জায়েয আছে। হতে পারে স্বামী যদি স্ত্রীকে বলে 'আমি তোমাকে ফেরত নিলাম' বা তার সাথে 'সহবাসে লিপ্ত হয়' তবেই তাকে ফেরত নেয়া হয়ে যাবে। ফেরত নেয়ার হ্মেত্রে স্ত্রীর অনুমতির দরকার নেই।
নারী অভিভাবক ব্যতীত নিজেই নিজের বিবাহ বসবে না। নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, যে নারী তার অভিভাবকের অনুমতি ছাড়া নিজের বিবাহ সম্পন্ন করবে, তার বিবাহ বাতিল,তার বিবাহ বাতিল,তার বিবাহ বাতিল। (তিরমিযী, আবু দাউদ)
পরচুলা ব্যবহার করা, শরীরের খোদাই করে অংকন করা নারীর জন্য হারাম। এ দু' টি কাজ কবিরা গুনাহের অন্তর্গত। নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, যে নারী পরচুলা ব্যবহার করে ও যে পরচুলা লাগিয়ে দেয় এবং যে নারী শরীরে খোদাই করে অংকন করে ও যে করিয়ে দেয় তাদের সকলের উপর আল্লাহর লা'নত। (বুখারী ও মুসলিম)
বিনা কারনে স্বামীর নিকট তালাক চাওয়া হারাম। নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, "যে নারী কোনরূপ অসুবিধা ছড়াই (বিনা কারনে) স্বামীর নিকট তালাক চায়, তার জন্য জান্নাতের সুঘ্রান হারাম"। (আবু দাউদ)
সদ্ভাবে স্বামীর অনুগত্য করা নারীর উপর ওয়াজিব। বিশেষ করে স্ত্রীকে যদি বিছানায় (সহবাসের জন্য) আহবান জানায়। নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, কোন স্বামী যদি স্ত্রীকে বিছানায় আহবান করে, কিন্তু স্ত্রী  তার আহবান প্রত্যাখ্যান করে, অতঃপর স্বামী রাগান্বিত অবস্হায় রাত কাটায়, প্রভাত হওয়া পর্যন্ত ফেরেস্তাগন সে স্ত্রীকে অভিশাপ দেয়। (বুখারী ও মুসলিম)
নারী যদি জানে যে রাস্তায় পরপুরুষ থাকবে, তবে বাইরে যাওয়ার সময় আতর-সুগন্ধি লাগানো হারাম। নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, " নারী আতর সুগন্ধি লাগিয়ে যদি মানুষের সামনে দিয়ে হেটে যায়-যাতে তারা সুঘ্রাণ পায়, তবে নারী এরূপ এরূপ অর্থাৎ ব্যভিচারীনি"। (আবু দাউদ)